স্মাক্ষর নিতেই দিতে হবে তিন হাজার টাকা। নাহলে ঘুরতে হবে মাসের পর মাস। বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার সুযোগে ঘুষ-দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে রংপুর জেলা যুব উন্নয়র অধিদপ্তরের বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করে কর্মকর্তা-কর্মচারিরা এ বিষয়ে মুখ খুলতে নারাজ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজদারি প্রত্যাশা করেছেন ভুক্তভোগিরা। অভিযোগে জানা যায়, বিভিন্ন সেচ্চাসেবী সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশনের জন্য সরকারি নির্ধারিত ট্রেজারি চালান ফি পাঁচ’শ টাকা। কিন্তু দাবি করা হয় তিন হাজার টাকার। বিভিন্ন উপজেলার যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অনিয়মের সিঁড়ি বেয়ে রংপুর জেলা অফিসে আসা ফাইল এক টেবিল থেকে অন্য টেবিলে সরাতে ক্লার্ক মোতালেবসহ অফিস সংশ্লিষ্টদের ধাপে ধাপে দিতে হয় দুই হাজার টাকা এবং উপ-পরিচালক দিলগীর আলমকে দিতে হয় এক হাজার টাকা। এ প্রসঙ্গে রংপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দিলগীর আলম দাবানলকে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না! জেলা অফিসে উপজেলা থেকে যে ফাইল পাঠানো হয় তা রেজিষ্ট্রেশন করা হয়। তিনি জানান, ৬ ডিসেম্বর রংপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে একটি চিঠি আসছে, যাতে সেবা প্রাপ্তি ফি বাবদ পঁচিশ’শ টাকা নেয়ার কথা বলা আছে। তবে সে বিষয়ে এখনো কোন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, নির্দেশনা ছাড়াই সেবা প্রাপ্তির ফি বাবদ পঁচিশ’শ টাকাও ইতোমধ্যে নেয়া হচ্ছে সেবা প্রার্থীদের কাছে থেকে। এছাড়াও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের নির্ধারিত ফি ছাড়াও বাড়তি অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে এই সরকারি অধিদপ্তরটিতে। রংপুর জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর জানায়, প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে রংপুর জেলায় রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত সংগঠনের সংখ্যা মাত্র ৮২টি। অভিযোগ রয়েছে, অফিসগুলো রেজিষ্ট্রেশনে বাড়তি টাকা দাবি করায় অনেকেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের রেজিষ্ট্রেশন নিতে তাদের প্যারা পোহাতে চাননা। কারণ যুব উন্নয়ন নীতিমালা অনুযায়ী রেজিষ্ট্রেশনভুক্ত সংগঠনগুলো কোন অর্থনৈতিক লেনদেন কর্মকান্ড করতে পারবে না। নাম প্রকাশ্যে অনিশ্চুক এক ভুক্তভোগি জানান, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন করতে গিয়ে যদি ঘুষ দিয়ে রেজিষ্ট্রেশন নিতে হয়, তাহলে দরকারই নেই। আগে নিয়ম ছিল সমবায়ের তালিকাভুক্ত হলেই কেবল যুব উন্নয়ন থেকে রেজিষ্ট্রেশন দেয়া হতো। সেই নিয়ম এখন আর মানা হয় না। এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক আসিব আহসান দাবানলকে বলেন, সরকারি নির্ধারিত ফি’র বাইরে বাড়তি কোন অর্থ তারা নিতে পারবে না। সরকারি ফি গ্রহণের জন্য অবশ্যই রিসিভ কপি দিতে হবে। বিষয়টি যেহেতু জানলাম, এবিষয়ে যুব উন্নয়ন অফিসারদের সাথে কথা বলা হবে। দেশের সবচেয়ে বড় সরকারি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর তার পূর্ণ শক্তি নিয়ে কাজ করতে পারছে না নানা অনিয়ম-দুর্নীতির জাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে। এ বিষয়ে রংপুর জেলা প্রশাসকসহ সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজদারি প্রত্যাশা করেছেন সচেতন মহল।